৫ টা গুরুত্বপুর্ন টিপ্স নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য –
আমি প্রায় দেখেছি, নতুন ফ্রিল্যান্সাররা অনেকে অভিযোগ (অভিমানের সুরে) করে। অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার’রা (সিনিয়র বড়’ভাইয়ারা) নাকি নতুন ফ্রিল্যান্সারদেরকে হেল্প করেন না। তাদের এই অভিযোগেটা পুরোপুরি মিথ্যা নয়, হ্যাঁ এটা সত্য! তবে ১০০% সত্য নয়। কারণ অনেক’ই আমি দেখেছি, যথেষ্ট পরিমাণ সহযোগিতা করে নতুনদেরকে।
হয়তো সবাই সহযোগিতা করতে পারে না। করণ, প্রায় বেশিরভাগ সিনিয়র ফ্রিল্যান্সারই চেষ্টা করে, নতুন ফ্রিল্যান্সারদেরকে হেল্প করার। আসলে অনেক প্রজেক্ট, ক্লাইন্ট এবং নিজেদের টিম মেনেজমেন্ট করতে করতে আসলে সময়’ই বের করা যায় না। তাই হয়তো অনেক সিনিয়র ফ্রিল্যান্সারই নতুনদেরকে সহযোগিতা করতে পারেন না।
আমি HB Arif, এসইও এবং কন্টেন্ট রাইটিং নিয়ে কাজ করতেছি, বেশ কয়েক বছর যাবত। শতের অধিক প্রজক্ট এ কাজ করেছি। বেশিরভাগই ডাইরেক্ট ক্লায়েন্ট। কয়েকটা ব্যাচ এসইও ট্রেনিং ও করিয়েছি।
এখন আসি মুল কথা’য়। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫ টা গুরুত্বপুর্ন টিপস শেয়ার করিতেছি, যেগুলো ফোলো করলে আমার মনে হয় তারা আরো একটু আরো ভালো করতে পারবে।

১. যে-কোনো “ছোট” একটি বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করাঃ
প্রায় নতুন’রা একটা ভুল করে থাকে, অনেক-গুলো বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে। কিছুদিন পর দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে একটাতেও ভালো করতে পারে না। শিখা’র সময় টোটাল সিলোবাস’এর সব-গুলো বিষয়’ই শিখতে হবে। কিন্তু, কাজ-শুরু করার সময়, যেই কোন একটি বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করা উচিৎ। শিক্ষানবিস কালীন যেই টিকস টা সব-চেয়ে ভালো লাগে, সেই টিকস টা দিয়ে শুরু করার পক্ষে আমি।
একটা বিষয় মাথা’য় রাখতে হবে! সব বিষয়ে অলরাউন্ডার থেকেও, আজ-কাল যে-কোন একটি বিষয়ে স্পেশালিস্ট এর ভ্যালু অনেক বেশি। তাই প্রথম দিকে যে-কোনো “ছোট” একটি বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করা’ই বুদ্ধিমানের কাজ বলে আমি মনে করি।
২. মার্কেটপ্লেসে যাওয়ার পূর্বে নিজেকে প্রস্তুত করাঃ
নতুন একজন ফ্রিল্যান্সার যেই বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী, সেই বিষয়ে কোর্স সম্পুর্ন করেই মার্কেটপ্লেসে যাওয়া’টা, বোকামী ছাড়া আর কিছু নয়। একটা বিষয় খেয়াল করেন, দেশের একটি দৈনিক প্রত্রিকায় ঢাকা শহরের কোন একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য জব-পোস্ট করলে, শুধু মাত্র ঢাকা শহর বা তার আশে-পাশের চাকরিপ্রার্থীরা ঐ প্রতিষ্ঠানের চাকরির জন্য আবেদন করে।
কিন্তু, যদি সেটা হয় অনলাইন ভিত্তিক কোন জব-পোস্ট, তাহলে সেখানে কেবলমাত্র ঢাকা শহরের না, শুধু বাংলাদেশে’র না, এবং কি এশিয়া মহাদেশে’র-ই-না, সারা-বিশ্বের ফ্রিল্যান্সার’রা ঐ প্রজেক্ট এর জন্য আবেদন করতে পারে। সারা-বিশ্বের ফ্রিল্যান্সাদের কে টপকিয়ে সদ্য ট্রেনিং সম্পুর্ন করা একজন ফ্রিল্যান্সার কিভাবে আশা করে, ঐ প্রজেক্টটা সে পাবে? সুতারাং, মার্কেটপ্লেসে যাওয়ার পূর্বে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
৩. আর্নিং নয়, স্কিল ডেভেলপমেন্ট’কে গুরুত্ব দেওয়াঃ
আমাদের দেশের নতুন ফ্রিল্যান্সারদের মাথায় একটা বিষয় কাজ করে, আম ‘তো কোর্স কমপ্লিট করে ফেলেছি। ক্লাইন্ট যখন কোন প্রজেক্ট দিবে, তখন প্র্যাকটিস করবো। এই ধারনাটা আমি বলবো ১০০% ভুল। এই রকম ভাবে যারাই চিন্তা যারাই কাজ শুরু করেছে, তাদের মধ্যে ৯৫ ভাগই ব্যর্থ ফ্রিল্যান্সার এর তালিকায় অন্তরভুক্ত হয়েছে। বিশ্বাস না হলে খোঁজ নিয়ে দেখুন।
আপনি যখন একজন মোটামুটি মানের স্কিল ওর্য়াকার হবেন! তখন আপনার কাজের অভাব হবে না, আর্নিং নিয়েও কোন সমস্যা হবে না। সুতারাং কোর্স কমপ্লিট করেই পুরো সিলোবাসের যেই অংশটি আপনার কাছে অনেক ভালো লাগে, সেই অংশটি’কে নিয়ে বেশি বেশি প্র্যাকটিস করুন। তারপর ঐ “ছোট” একটি বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করুন।
৪. ”শর্টকাট মেথড” পরিহার করাঃ
একটা বিষয় শুধু খেয়াল করলে বুজতে পারবেন। আমাদের দেশে অনার্স-মাস্টার্স (১৫’বছর থেকে ১৮’বছর যাবত পড়ালেখা করে) পাশ করে, কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগদান করে, শুরুতে বেতন কেমন হবে? সামান্য কয়েকটা প্রতিষ্ঠান ছাড়া, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান (১৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ হাজার) এর বেশি বেতন দেয় না।
কিন্তু ফ্রিল্যান্সিএর বিষয় আসলে আমাদের আর ধৈর্য থাকে না। তিন থেকে ছয় মাসের একটা কোর্স করে, আমরা হাজার ডলার আনিং এর স্বপ্ন দেখতে থাকি। আমরা ভুলে যায় (১৫,০০০ থেকে ২৫,০০০) হাজার টাকা বেতনের চাকরির জন্য (১৫’বছর থেকে ১৮’বছর) যাবত পড়ালেখা করা লাগে আমাদের দেশে। কিন্তু হাজার ডলার আনিং এর জন্য, তিন থেকে ছয় মাসের একটা কোর্স সম্পুর্ন করে, (চার থেকে ছয় মাস) বা এক বছর সময় প্র্যাকটিস করাতে পারি না নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য।
৫. কোর্স সম্পুর্ন হলে, ইন্টার্ন (লাইভ প্রজেক্টে কাজ) করাঃ
কোর্স সম্পুর্ন করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে, লোকাল কোন প্রতিষ্ঠান অথবা কোন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারের (সিনিয়র বড়’ভাইয়) সাথে ইন্টার্ন/লাইভ প্রজেক্ট এ কাজ করা উচিৎ। একটা বিষয় মনে রাখবেন, কোর্স থেকে বেসিক এবং থিওরিকেল (তাত্ত্বিক) ধারনা পাবেন। কোর্স চলাকালীন হয়তো প্র্যাকটিক্যালি সামান্য কিছু কাজও করবেন, সেটা আসলে খুবই সামান্য।
যখনই আপনি ইন্টার্ন করবেন, তখন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের লাইভ প্রজেক্টে আপনার কাজ করার সুযোগ হবে। এতে করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতা হবে। এবং আপনার পোর্টফোলিওতে সেটা আপনি যোগ করতে পারবেন, যা পরবর্তীতে মার্কেটপ্লেসে আপনাকে কাজ পেতে সহয়োগিতা করবে।
বিঃদ্রঃ- কেউ যদি এসইও এবং কন্টেন্ট রাইটিং সেকশন এ ইন্টার্ন (লাইভ প্রজেক্টে কাজ) করতে চান, আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমার নাম HB Arif লিখে গুগল এ সার্চ করলে, আমার কন্টাক্ট ডিটেইলস পেয়ে যাবেন।
Leave a Reply